স্তন ক্যান্সারকে নারীদের নীরব ঘাতক বলা হয়। এই গোপন ব্যাধির
শিকার হয়ে অনেক নারীকে মৃত্যুর সাথে লড়তে হয়। বিশ্বে প্রতি ৮ জনের মধ্যে একজন
ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত। পরিসংখ্যানটি আসলেই ভয়াবহ এবং প্রতি ৩৬ জন আক্রান্ত
নারীর মধ্যে মৃত্যুর সম্ভাবনা একজনের।
স্তন ক্যান্সার আসলে এক ধরনের ম্যালিগন্যান্ট টিউমার, যেটি
স্তনের কোষগুলো থেকে শুরু হয়।আর এই ম্যালিগন্যান্ট টিউমারটি হওয়ার কারণ কী, যা
রূপ নেয় স্তন ক্যান্সারে, তা জানা জরুরি। তবে একাধিক কারণকে
স্তন ক্যান্সারের জন্য দায়ী করা হয়ে থাকে। আসুন জেনে নেই কারণগুলো—
১) ৩০ বছর বয়সের পরে যারা প্রথম মা হয়েছেন, তাদের
স্তন ক্যান্সারের প্রবণতা একজন কমবয়সী মা হওয়া নারীর থেকে অনেক বেশি থাকে।
২) অতিরিক্ত মদ্যপান মেয়েদের স্তন ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়িয়ে
দেয়। স্তন ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষা পেতে, অবশ্যই মদ্যপান ত্যাগ করা
প্রয়োজন।
৩) অবিবাহিতা, সন্তানহীনা নারীদের মধ্যে
স্তন ক্যান্সারের প্রকোপ বেশি থাকে।
৪) একইভাবে যারা সন্তানকে কখনো বুকের দুধ পান করাননি তাদের স্তন
ক্যান্সার বেশি হয়।
৫) অল্প বয়সে বাচ্চা নিলে, দেরিতে পিরিয়ড শুরু হলে, তাড়াতাড়ি
পিরিয়ড বন্ধ হয়ে গেলে স্তন ক্যান্সারের প্রকোপ বেড়ে যায়।
৬) একাধারে অনেক দিন জন্ম নিরোধ পিল খেলেও স্তন ক্যান্সার হওয়ার
ঝুঁকি বেড়ে যায়।
৭) মা-খালাদের থাকলে সন্তানদের হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
৮) অস্বাস্থ্যকর ডায়েট স্তন ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে
পারে।
স্তন ক্যান্সারের লক্ষণঃ
১) বেশিরভাগ রোগী বুকে চাকা নিয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়।
২) বুকে চাকা সেই সাথে কিছু কিছু রোগী ব্যথার কথাও বলে থাকে।
৩) স্তনের আকার ও আকৃতির পরিবর্তন হয়।
৪) স্তনের নিপল ভিতরের দিকে ঢুকে যায়।
৫) স্তনের বোঁটার চামড়া উঠতে থাকে।
৬) অনেক সময় যে বুকে ব্যথা সেদিকের হাত ফোলা নিয়েও আসতে পারে।
৭) এগুলো ছাড়াও স্তন ক্যানসার শরীরের অন্য অংশে কোথাও ছড়িয়ে পড়েছে এমন উপসর্গ নিয়ে আসে যেমন: হাড়ে ব্যথা, মাথা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, জন্ডিস ইত্যাদি।
Ø কি ধরণের
পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারেঃ
*মেমোগ্রাম (Mammogram) বা স্তনের এক্স-রে
*ব্রেস্ট আলট্রাসাউন্ড (Breast ultrasound)
*ব্রেস্ট ম্যাগনেটিক রিজোন্যান্স
ইমাজিং (Breast magnetic resonance imaging,
(MRI))
*বায়োপসি (Biopsy)
*রক্তের পরীক্ষা
*বুকের এক্স-রে
*কম্পিউটারাইজড টমোগ্রাফী স্ক্যান (Computerized tomography (CT) scan)
*পজিট্রন ইমিশন টমোগ্রাফী স্ক্যান (Positron emission tomography (PET) scan)
স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসাঃ
স্তন ক্যান্সোরের চিকিৎসা নির্ভর করে স্তন ক্যান্সারের ধরণের উপর, ক্যান্সারের
কোষগুলো হরমোণ সংবেদনশীল কিনা তার উপর। সম্ভব হলে সার্জারি করাই উত্তম। তাছাড়া
কেমোথেরাপি, রেডিও থেরাপি, হরমোন
থেরাপি ইত্যাদি।
Ø মনে রাখবেন প্রাথমিক
পর্যায়ে রোগ নিরূপণ করলে এবং চিকিৎসা করলে আপনি অনেক দিন সুস্থ থাকবেন। সার্জারি
করার সময় টিউমারটি বগলে লসিকা গ্রন্থিসহ অপসারণ করলে এই রোগ আবার দেখা দেয়ার
সম্ভাবনা খুব কম। অসম্পূর্ণভাবে টিউমার অপসারণ করলে এই রোগ আবার হতে পারে।
বর্তমানে এই সার্জারি টেকনোলজি অনেক উন্নতি লাভ করেছে যার ফলে এই রোগের চিকিৎসা
খুব সহজ হয়ে গিয়েছে। যদিও নারীদের ব্রেস্ট ক্যান্সার বেশি হয়। তবে সংখ্যায় কম হলেও
পুরুষরাও কিন্তু এই রোগের ঝুঁকিমুক্ত নয়।
Ø ভারতে চিকিৎসা সংক্রান্ত
যে কোনো ধরণের প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা থাকলে আমাদের সাথে নির্দ্বিধায় যোগাযোগ
করুন।(মেডিকেল ভিসা , ডাক্তার এর এপয়েন্টমেন্ট, সেকেন্ড
ওপিনিয়ন)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন